ফেব্রুয়ারিতেই ফোরজি আসছে বাংলাদেশে!

অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতেই বাংলাদেশে আসছে দ্রুতগতির ইন্টারনেট ফোরজি।

বাংলাদেশ ২০১৮ সালে কিছু মাইল স্টোন উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করতে যাচ্ছে। দেশের টেলিকমিউনিকেশন, তথ্য প্রযুক্তি এবং সংশ্লিষ্ট শিল্পের জন্য এটি হবে বড় ধরনের অগ্রগতি। নতুন বছরে বাংলাদেশ দেশের প্রথম যোগাযোগ স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করবে। টেলিকম রেগুলেটর ফোরজি/এলটিই সেবা চালু করতে ইতোমধ্যেই প্রক্রিয়া শুরু করেছে এবং সেবা প্রদানে মোবাইল নম্বর পোর্টাবিলিটি (এমএনপি) অপারেটর নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে চালু হতে যাচ্ছে টেলিকমিউনিকেশন সেবার সর্বাধুনিক সংস্করণ ফোরজি। শুরুতে বিভাগীয় শহরগুলোতে এ সেবা চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী। সর্বাধুনিক এই ফোরজি সেবা চালু হলে দেশের তথ্য প্রযুক্তি ও টেলিকমিউনিকেশন খাতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
২০১২ সালের অক্টোবরে টেলিটকের মাধ্যমে দেশে চালু হয় থ্রি জি সেবা। দেশের বেসরকারি অপারেটররা থ্রিজি সেবা দেয়া শুরু করে ২০১৩ সাল থেকে। বৈশ্বিক মোবাইল ফোন অপারেটরদের সংগঠন জিএসএম অ্যাসোসিয়েশন এর তথ্য মতে, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে ২০ শতাংশ ইন্টারনেট সংযোগ থ্রিজি সেবার মধ্যে। এমন সময় ফোরজি সেবা চালুর প্রক্রিয়া চলছে বেশ জোরেশোরেই। দেশের মোবাইল অপারেটর বলছেন এ বিষয়ে তাদের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণসহ প্রযুক্তিগত উন্নয়নে কাজ চলছে।
বাংলাদেশ ২০১৫ সালের নভেম্বরে ফ্রান্সের থালেস এলেনিয়া স্পেসের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। স্যাটেলাইটটিতে ৪০টি ট্রান্সপোন্ডার রয়েছে। এটি সার্ক সদস্য রাষ্ট্রসমূহ, ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইন ও তুর্কমেনিস্তান, কিরগিজস্তান ও তাজিকিস্তানের মতো দেশে সেবা প্রদানে সক্ষম হবে। একটি ট্রান্সপোন্ডার ৩৬ এমএইচ’র সমান।

বাংলাদেশ টেলিভিশন চ্যানেল, টেলিফোন এবং বেতার সংযোগের জন্য স্যাটেলাইট ভাড়া বাবদ বছরে ১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট চালু হবার পর দেশ বছরে ১১০ থেকে ১২০ কোটি টাকার বৈদেশিক মূদ্রা সাশ্রয় করতে সক্ষম হবে।

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) দেশে ফোর-জি সেবা চালু করতে ১৪ ফেব্রুয়ারি ফোর-জি লাইসেন্স ইস্যু করবে। এর আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি তিনটি ভিন্ন ব্যান্ডের জন্য অকশন দেয়া হবে।

এমটব’র মহাসচিব টি.আই,এম নুরুল কবির জানান, যদি আমরা একই সঙ্গে ফোর জি ইমপ্লিমেন্ট করতে পারি তাহলে গ্রাহকরা অনেক গতির ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পাবে। বাংলাদেশে ডিজিটালে সার্বিসে নতুন যুগের সূচনা হবে।’
ফোর জি লাইসেন্স পাওয়া এবং তা বাস্তবায়নের কিছু নীতিমালা তৈরি করেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। এখানে বলা হয়েছে প্রথম পর্যায়ে লাইসেন্স পাওয়ার ৯ মাসের মধ্যে সকল বিভাগীয় হেড কোয়ার্টারে এ সেবা দিতে হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে লাইসেন্স পাওয়ার ১৮ মাসের মধ্যে ৩০ শতাংশ জেলা হেড কোয়ার্টারে এ সেবা প্রদান করতে হবে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম জানান, ‘সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ফেব্রুয়ারির মধ্যেই এ সেবা দিতে পারবো। যাদের যেখানে টাওয়ার নেই, তারা টাওয়ারও শেয়ার করতে পারবেন। আর বিটিআরসি থেকে কঠোর মনিটরিং করা হবে। তারা স্পিডটা কতটুকু দিতে পারছে।’
বাংলাদেশ মোবাইল ফোন নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিটিআরসির তথ্য মতে, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৪ কোটি। ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সংখ্যা ৭ কোটি ৯২ লাখ। যার মধ্যে ৭ কোটি ৩৮ লাখ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন।
তবে বাংলাদেশে ফোরজি আসা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন গ্রাহকরা
তাদের দাবি ফোরজি ইন্টারনেট যেন সহজলভ্য হয় এবং পৌছে যায় সকল গ্রাহকের মধ্যে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.